কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন? তাহলে চলুন জেনে নেই কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি কি উপকার হয় এবং এর ক্ষতির দিক কি কি হতে পারে।
আমরা অনেকেই জানিনা কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। কোয়েল পাখির ডিম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে, রক্তস্বল্পতার ঝুঁকি কমাতে, কিডনি ও হার্টকে সুস্থ রাখতে, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।
পেজ সূচীপত্রঃ কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা কি
- কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বা কোয়েল পাখি দেখতে কেমন
- কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা
- কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ সমূহ
- কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
- গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা
- শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
- ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় কোয়েল পাখির ডিমের ভূমিকা
- কোয়েল পাখির ডিম হাঁপানি শিথিল করতে সাহায্য করে
- কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম
- কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতির দিক
- শেষ কথাঃ ভরপুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কোয়েল পাখি ডিম
কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বা কোয়েল পাখি দেখতে কেমন
কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বা কোয়েল পাখি দেখতে কেমন সেই সম্পর্কে এখন আমরা জানবো। বিভিন্ন প্রকার জাত অনুসারে কোয়েল পাখির বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। কোয়েল পাখি আকারে সাধারণত ছোট হয় তাই এদের দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। কোয়েল পাখির দেহের বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। কোয়েল পাখির গায়ের রং বাদামী রঙের হয়।
এরা সাধারণত খুব কম বয়সের ডিম পাড়ে ৬ থেকে ৭ সপ্তাহ হলেই ডিম দেওয়া শুরু করে এবং অনেকদিন পর্যন্ত ডিম দেয়।কোয়েল পাখির মাংস খেতে খুবই সুস্বাদু। কোয়েল পাখির মাংস বাণিনিজ্যিকভাবেও বাজারজাত করা হয়। কোয়েল পাখির মাংসে তুলনামূলক কম ফ্যাট থাকে তাই যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের জন্য কোয়েল পাখির মাংস খুবই উপকারী।
একটি প্রাপ্ত বয়স্ক কোয়েল পাখির ওজন ১৫০-২০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। কোয়েল পাখির বাচ্চা ফুটানোর জন্য মাত্র ১৬-১৮ দিন সময় লাগে। বাচ্চা ফুটাতে সময় কম লাগে বলে খুব কম সময়ে কোয়েল পাখি বাজারজাত করা যায়। তাই এ থেকে অধিক মুনাফা পাওয়াও সম্ভব হয়।
আরোও পড়ুনঃ
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক দুটোই রয়েছে তবে আমরা উপকারিতা সম্পর্কে আগে জানবো। কোয়েল পাখি পালনে খরচ কম হওয়ার কারণে বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে কোয়েল পাখি পালন করা হচ্ছে। একটি কোয়েল পাখি বছরে প্রচুর ডিম দেওয়ার কারণে ডিমের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কোয়েল পাখির ডিম আমাদের দেহের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করতে ভূমিকা পালন করে। এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আছে বলে আমাদের যাদের উচ্চ-রক্তচাপ রয়েছে তা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে কোয়েল পাখির ডিম। শক্তির উৎস হিসেবে কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত কার্যকরী। কোয়েলের ডিমে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং প্রোটিন রয়েছে যা আমাদের শরীরে খুব তাড়াতাড়ি এনার্জি বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করে।
কোয়েল পাখির ডিমের কোলেস্টেরলের পরিমাণ ১.৪% যা মুরগির ডিমের তুলনায় ৭ ভাগের ১ ভাগ। যে সকল মানুষের কোলেস্টেরল পরিমাণ বেশি তাদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া উত্তম। কোয়েল পাখির ডিম ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। আমাদের চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভিটামিন এ প্রচুর পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে। কোয়েল পাখির ডিমে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার কারণে আমাদের চোখের পেশিকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
যার ফলে চোখের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।তমানুষের দেহে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন উপাদান থাকে যা কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীর থেকে টক্সিন বাইরে বের করতে সাহায্য করে। ফলে মানুষের সাধারণত শারীরিক সমস্যা কম হয়। বাচ্চাদের শারীরিক মানসিক ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে কোয়েল পাখির ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিম শিশুদেরকে বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ সমূহ
কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টিগুণ সমূহ বর্ণনা করতে গেলে অনেক। কোয়েল পাখির পাঁচটি ডিম সমান মুরগির একটি ডিম। কিন্তু কোয়েল পাখির ডিম আকারে দেখতে ছোট বলে আবার বোকা বনে যাবেন না। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন খনিজ ও পুষ্টিকর উপাদান যা মুরগির ডিমে নেই। এমনকি চীনা ওষুধেও এই ডিমের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়।
ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে কোয়েল পাখির ডিমে। আয়রন, ভিটামিন বি১২, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, জিংক, থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে। প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে। কোয়েল পাখির ডিম স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কোয়েল পাখির ডিমে রয়েছে প্রচুর পুষ্টি গুনাগুন। যা সকল ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে খাওয়া উত্তম। বিশেষ করে বাচ্চা ও গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টির চাহিদা পূরণের জন্য কোয়েল পাখির ডিম অতুলনীয়। কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা অন্যান্য ডিমের তুলনায় অনেক বেশি। আমাদের দেশে কোয়েল পাখির মাংস ও ডিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে
কোয়েল পাখির ডিমে কি এলার্জি আছে নাকি নেই সে বিষয়ে প্রশ্ন বা দ্বিধা অনেকেরই মনে রয়েছে। ডিম খেলে এলার্জি হয় কিন্তু এই ডিম খেলে কাটবে এলার্জি জানেন কি কোন ডিমে রয়েছে এত পুষ্টিগুণ।গবেষণায় দেখা গিয়েছে কোয়েল পাখির এলার্জির লক্ষণ ও মাত্রই কমিয়ে দিতে পারে কোয়েলের ডিমে এলার্জি প্রতিরোধকারী উপাদান রয়েছে।
পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই এলার্জিজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোয়েল পাখির ডিম এলার্জিজনিত সর্দি ও কাশির বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। এতে রয়েছে এলার্জি প্রতিরোধকারী উপাদান। গবেষণায় দেখা যায়, কোয়েল পাখির কাঁচা ডিম এলার্জির লক্ষণ মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। আমাদের শরীরে এলার্জিজনিত সমস্যা থাকার কারণে আমরা কোন কিছু খেতে পারিনা।
যে কোনো খাবার খাওয়ার আগে প্রথমে আমরা অনেক চিন্তা করি। যে এই জিনিসটাতে অ্যালার্জি আছে কিনা এলার্জিজনিত খাবার আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। কোয়েল পাখির ডিমে বিশেষ ধরনের কোন এলার্জি নেই। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিমে এমন কিছু উপাদান আছে যা শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং এলার্জির প্রতিক্রিয়াকে নষ্ট করে তৈরি করে।
আরোও পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার উপকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক এর মধ্যে উপকারের দিকই বেশি রয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া যাবে কিনা? এর উত্তর হ্যাঁ, কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারবেন। কোয়েল পাখির ডিমে ভিটামিন বি১ এর পরিমাণ মুরগির ডিম থেকে প্রায় ছয় গুন বেশি থাকে।
ফসফরাস ও আয়রন ও থাকে প্রায় ৫ গুন বেশি। গর্ভাবস্থায় মায়েদের প্রচুর পুষ্টির দরকার রয়েছে। আর এই পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য কোয়েল পাখির ডিম অতুলনীয়। গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ডিম রাখা প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিম উপকারিতা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভবতী ও স্তন্যদান কারী মায়েদের জন্য কোয়েল পাখির ডিম অত্যন্ত উপকারী।
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মা কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খেলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বৃদ্ধিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গর্ভবতী মায়েদের ক্যালরির প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় ক্যালোরির চাহিদা মেটায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে । কোয়েল পাখির ডিমে পরিমাণে অনেক বেশি পটাশিয়াম থাকাযর কারণে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপকে প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
শিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা অতুলনীয়। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক থাকলেও শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি ও শক্তির জন্য শিশুদেরকে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ানো উচিত। শিশুদের শারীরিক বিকাশ ও মানসিক বিকাশ বৃদ্ধি করে কোয়েল পাখির ডিম। এছাড়াও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটাতে কোয়েল পাখির ডিম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
যে সকল শিশুদের বয়স ৯ মাস থেকে ১ বছর সে সকল শিশুদের সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন ১ থেকে ২টি করে ডিম খাওয়ানো যেতে পারে। আর ১ থেকে তার বেশি বয়সের বাচ্চাদের দিনে ২ থেকে ৩টি ডিম খাওয়ানো যেতে পারে। শিশুদের কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতার মধ্যে রয়েছে লম্বা হওয়া, ওজন বৃদ্ধি করা।কোয়েল পাখির ডিমে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন এ রাতকানা রোগীর জন্য খুবই উপকারী।শিশুদের কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ালে রাতকানা, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। এছাড়াও শিশুদের বিভিন্ন ধরনের রোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। আপনার শিশুর প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই কোয়েল পাখির ডিম রাখার চেষ্টা করুন।
বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা
বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে কোয়েল পাখি ডিমের উপকারিতা অত্যন্ত কার্যকরী। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা কলিন নামে এক ধরনের পুষ্টি যা মানুষের মস্তিষ্ককে তীক্ষ্ণ করে। বিশেষ করে মানুষের বয়স বাড়ার ব্যাপারে। এছাড়াও কোয়েল পাখির ডিমের মধ্যে থাকা জিংক ও সেলেনিয়াম পুষ্টি যা মানুষের ত্বকের জন্য অনেক ভালো। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানুষের ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে
ঐতিহ্যবাহী চীনা ঔষধ থেকে জানা যায় যে, কোয়েল পাখির ডিম বয়স বৃদ্ধি কমিয়ে দিতে পারে। কোয়েল পাখির ডিমের সাদা অংশে রয়েছে লাইসিন ৮ নামক অ্যামিনো এসিড যা ত্বকে কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে। বার্ধক্য প্রতিরোধ করার পাশাপাশি এটি আমাদের দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে ও রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।
কোয়েল পাখির ডিমে ভিটামিন বি থাকায় চোখের দৃষ্টিশক্তি রক্ষার সাথে সাথে লোহিত রক্তকণিকাও উৎপাদন করে। যা আমাদের বিভিন্ন পুষ্টির অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক থাকলেও কোয়েল পাখির ডিম খেলে শরীরের দূষিত পদার্থকে মূত্রের মাধ্যমে বের করে আমাদের দেহকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের সুরক্ষায় কোয়েল পাখির ডিমের ভূমিকা
ত্বক ও চু্লের সুরক্ষায় কোয়েল পাখির ডিমের ভূমিকা অত্যন্ত কার্যকরী। ত্বক ও চুলের জন্য কোয়েল পাখির ডিম বেশ উপকারী। অন্যান্য সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে আমাদের চুল, ত্বক ও চোখের যত্ন বেশি নেওয়া হয়। এই ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি যা চোখের দৃষ্টিশক্তি রক্ষার করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ অল্প আলোয় চোখকে দেখতে সাহায্য করে ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। ভিটামিন এ চোখের কর্নিয়া ও অন্য অংশকে পুষ্টি দেয়।
কোয়েল পাখির ডিম এ কোলাজেন রয়েছে। কোলাজেন একটি প্রোটিনের নাম যা ত্বক কোমল রাখে এবং ত্বকের প্রতিরোধী ক্ষমতা বাড়ায়। আমাদের শরীরে এ ধরনের অ্যামিনো এসিড তৈরি করে না বলে এর ঘাটতি পূরণ করতে কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া দরকার। কোয়েল পাখির ডিমে থাকা ভিটামিন এ ও ই ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
ত্বক ও চুলের যত্নে একটু এক্সট্রা কেয়ার নিতে হয়। বিশেষ করে কিশোর বয়সে ছেলে মেয়ে উভয়ে ত্বক নিয়ে তখনই বেশি সচেতন থাকে। কোয়েল পাখির ডিম ত্বক ও চুলের সুস্থতা নিশ্চিত করে। কোয়েল পাখির ডিমের আকার অনুপাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে রিবোফ্লাভিন, একের অধিক কোয়েল পাখির ডিম নিয়মিত খেলে তার আমাদের লিভার ত্বক ও চুলের সুস্থতার জন্য যথেষ্ট।
আরোও পড়ুনঃ
কোয়েল পাখির ডিম হাঁপানি শিথিল করতে সাহায্য করে
কোয়েল পাখির ডিম হাঁপানি শিথিল করতে সাহায্য করে। হাঁপানি একটি ক্রনিক সমস্যা যা শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা তৈরি করে এটি এমন একটি সমস্যা যা প্রাণঘাতই হতে পারে একেকজনের ক্ষেত্রে হাঁপানি সমস্যা এক এক রকমের হতে পারে হাজী কাশি বুকে চাপা ভাব শ্বাস নিতে কষ্ট হয় ইত্যাদি হাঁপানির অন্যতম লক্ষণ। কোয়েল পাখির ডিম হাঁপানি রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কারণ কোয়েল পাখির ডিমের এলার্জি প্রতিরোধকারী উপাদান হাঁপানির বিরুদ্ধেও কাজ করে। ধুলাবালির জীবাণুতে আক্রান্ত ১৮০ জন হাঁপানি আক্রান্ত শিশু নিয়ে করা একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা কোয়েল পাখির ডিম খেয়েছে তাদের হাঁপানি তীব্রতা ও অস্থিরতা উল্লেখযোগ্য হারে কম। কোয়েল পাখির ডিমকে অ্যাজমা রোগের পথ্য হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন চাইনিজরা।
হাঁপানি সমস্যা সেভাবে পুরোপুরি সারানো যায় না বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তবে এর লক্ষণ গুলিকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হাঁপানির ক্ষেত্রে পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। তাই কোন ক্ষেত্রে হাঁপানি বাড়তে পারে তা অবশ্যই জানা প্রয়োজন। হাঁপানি কমানোর জন্য আপনি প্রতিদিন দুই থেকে তিনটা করে কোয়েল পাখির ডিম খেতে পারেন
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম
কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম এর কোন ধরা বাধা নেই। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। কোয়েল পাখির ডিম আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে ভরপুর। কোয়েল পাখির ডিম ছোট বলে আমরা অনেকেই অনেক সময় দেখা যায় বেশি করে খাওয়ার চেষ্টা করি। আমরা ভাবি যে এই ছোট্ট ডিমে আর কতটুকুই বা পুষ্টি থাকবে। কোয়েল পাখির ডিম যদিও দেখতে অনেকটা ছোট।
পুষ্টিগুণ মুরগির ডিমের থেকে অনেক বেশি বলে অতিরিক্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন ৩ থেকে ৪টি পর্যন্ত কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া যায়। আর ছোট বাচ্চাদের জন্য সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩টি কোয়েল পাখির ডিম খাওয়া উত্তম। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ প্রতিদিন ১ থেকে ২টি ডিম খেতে দেওয়া যেতে পারে। সব থেকে উত্তম হলো কোয়েল পাখির ডিম সিদ্ধ করে খাওয়া।
আমরা অনেকেই জানিনা কোয়েল পাখির ডিমে কত ক্যালরি রয়েছে। কোয়েল পাখির ডিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে। যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কোয়েল পাখির ডিমে প্রতি ১০০ গ্রামে ১৫৮ ক্যালোরি আছে।কোয়েল পাখি ডিম যে কোন বয়সের মানুষের জন্যই খাবার উপযোগী কোয়েল পাখির ডিমের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতির দিক
কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতির দিক তেমন একটা না থাকলেও কিছুটা রয়েছে। সেগুলোই আমরা এখন জেনে নেবো। কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক গুলোর মধ্যে এতক্ষণ আমরা কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা কোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতির দিক সম্পর্কে জানবো। কোয়েল পাখির ডিমে যেমন বিভিন্ন রকমের উপকারিতা রয়েছে।
আবার পুষ্টিগুণেও অতুলনীয়। অতিরিক্ত মাত্রায় কোয়েল পাখির ডিম খেলে কোয়েল পাখির ডিমের প্রতি ১০০ গ্রামে কোলেস্টেরল ৮৪৪ গ্রাম থাকে। তাই আপনি যদি দৈনিক প্রয়োজনীয় ২০০ গ্রামের বেশি কোলেস্টেরল খেয়ে ফেলতে না চান। তাহলে কপাগপ কোয়েল পাখি ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই একটু সাবধানে হতে হবে।
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক রয়েছে। কোয়েল পাখির ডিমের সালমোনেলার মতো ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। তাই ডিম ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া উচিত। ডিমের অতিরিক্ত সেবন কোন মানুষের জন্যই ভালো নয়। তাই আমাদের যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের উচিত অতিরিক্ত পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম না খাওয়া।
আরোও পড়ুনঃ
শেষ কথাঃ ভরপুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কোয়েল পাখি ডিম
আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আজকের আর্টিকেলটির মধ্যে কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কোয়েল পাখির ডিমের পুষ্টি গুনাগুন সম্পর্কে ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। আপনি চাইলে এই আর্টিকেলটি আপনার পরিচিতদের সাথে শেয়ার করতে পারেন।
আসলে পৃথিবীতে যত ধরনের ডিম খাদ্য উপযোগী রয়েছে তার মধ্যে গুণে মানে পুষ্টিতে ভরপুর হলো কোয়েল পাখির ডিম। সাধারণত বয়স ৪০ পার হলেই ডিম পরিহার করতে বলা হয়। কেননা ব্রয়লারের ডিম গুলো খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু তার পরিবর্তে কোয়েল পাখির ডিম যে কোন বয়সের মানুষেরা সহজেই নিঃসংকোচে খেতে পারেন।
কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা ও ক্ষতির দিক যেমনটা রয়েছে সে অনুযায়ী আমাদের কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছু উপকার বয়ে আনে না। সঠিক উপকার পেতে চাইলে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমাণে কোয়েল পাখির ডিম খেতে হবে। তবেই উপকার পাওয়া সম্ভব।
রকমসকম ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url